কলা ( Tissues ) || ষষ্ঠ অধ্যায় || Class-9 || NCERT || TBSE
নবম শ্রেণী কলা ( Tissues )
ষষ্ঠ অধ্যায়
1) কলা কি?
Ans : উৎপত্তিগত ভাবে একই এবং কার্যগতভাবে একই সম বা অসম আকৃতির কোষ সমষ্টিকে কলা বলে।
2) ভাজক কলা কি? চিত্রসহ এর বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ?
Ans : একই আকৃতির সম্পন্ন, পাতলা কোশপ্রাচীর বিশিষ্ট, সর্বদা বিভাজনে সক্ষম তরুণ কোশ সমষ্টিকে ভাজক কলা বলে।
• বৈশিষ্ট্য :
i) ভাজক কলার কোষ গুলি আকারে সাধারণত ছোট এবং দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে প্রায় সমান হয়।
ii) প্রতিটি কোষ ঘন দানাদার সাইটোপ্লাজমে পূর্ণ থাকে।
iii) প্রতিটি কোষে একটি বড় ও সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াস থাকে।
iv) কোষ প্রাচীর খুব পাতলা। গৌণ কোষ প্রাচীর স্তর অনুপস্থিত।
v) কোষগুলির মাঝে কোন কোশান্তর রন্ধ্র থাকে না।
3) বহুকোষী জীবের ক্ষেত্রে কলার উপযোগিতা লেখ?
Ans : • i) বহুকোষী জীবের নানা জৈবনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একাধিক কোশ বা কোশগুচ্ছ বা কলার প্রয়োজন।
• ii) কতকগুলি কলা সমষ্টিগত ভাবে জীবদেহে নির্দিষ্ট কলাতন্ত্র সৃষ্টি করে।
• iii) কলা জীব দেহের অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়।
4) অবস্থান অনুসারে ভাজক কলা কত প্রকার ও কি কি? এদের কাজ লিখ ?
Ans : তিন প্রকার । যথা - অগ্রস্থ ভাজক কলা ,পার্শ্বস্থ ভাজক কলা ও নিবেশিত ভাজক কলা।
• কাজ :
অগ্রস্থ ভাজক কলা : এই ভাজক কলা উদ্ভিদ দেহের দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায়।
পার্শ্বস্থ ভাজক কলা : এই ভাজক কলা উদ্ভিদের প্রস্থ বৃদ্ধি ঘটায়।
নিবেশিত ভাজক কলা : এই ভাজক কলা উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়।
5) ভাজক কলা উদ্ভিদের কোথায় দেখা যায় ?
Ans : উদ্ভিদের বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে , যেমন - মূল ও কান্ডের অগ্রভাগে ।
6) ভাজক কলার কাজ লিখ ?
Ans :
i) ভাজক কলা উদ্ভিদ দেহে নতুন অঙ্গ সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটায়।
ii) ভাজক কলার কোষ থেকেই স্থায়ী কলার উৎপত্তি হয়।
iii) এই কলার কোষ গুলি ক্রমাগত মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ও উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়।
7) স্থায়ী কলার বৈশিষ্ট্য ও কাজ লিখ ?
Ans :
• বৈশিষ্ট্য :
i) কোষগুলি পাতলা বা পুরু কোশপ্রাচীর যুক্ত হয় ।
ii) এই কলার কোষ গুলির মধ্যে ভ্যাকুওল থাকে।
iii) কোষগুলি আকারে সাধারণত গোলাকার, ডিম্বাকার, বহুভুজ আকারের হয়।
• কাজ :
i) উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করে।
ii) খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে।
iii) খাদ্য ও জলের সঞ্চয় ও পরিবহনে সাহায্য করে।
8) বিভিন্ন সরল স্থায়ী কলার নাম লেখ? এবং এদের কাজ লিখ?
Ans : প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা, স্ক্লেরেনকাইমা ।
• কাজ :
প্যারেনকাইমা : খাদ্য উৎপাদন , খাদ্য সঞ্চয় ও সংবহন এই কলার প্রধান কাজ।
কোলেনকাইমা : উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করা, ক্লোরোপ্লাস্ট থাকলে খাদ্য প্রস্তুত করা এই কলার প্রধান কাজ।
স্ক্লেরেনকাইমা : দৃঢ়তা প্রদান করা এই কলার প্রধান কাজ।
9) উদ্ভিদ দেহে অগ্রস্থ ভাজক কলা কোথায় পাওয়া যায়?
Ans : সপুষ্পক উদ্ভিদের মূল ও কান্ডের অগ্রভাগে পাওয়া যায়।
10) কোন কলা নারকেলের চিবড়া গঠন করে?
Ans : স্ক্লেরেনকাইমা কলা।
11) কোষ প্রাচীরের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা এবং স্ক্লেরেনকাইমা ----এদের মধ্যে পার্থক্য লিখ?
Ans :
12) বায়ুপূর্ণ প্যারেনকাইমা কে কি বলে?
Ans : এরেনকাইমা।
13) তেল , ট্যানিন প্রভৃতি বর্জ্য পদার্থ পূর্ণ প্যারেনকাইমাকে কি বলে?
Ans : ইডিওব্লাস্ট।
14) ক্লোরোপ্লাস্ট যুক্ত প্যারেনকাইমাকে কি বলে?
Ans : ক্লোরেনকাইমা।
15) কোলেনকাইমা কি ?এর কাজ লেখ?
Ans : অসম ভাবে স্থূল প্রাচীরবিশিষ্ট সজীব কোষ গুচ্ছ দ্বারা গঠিত, বিভাজনে অক্ষম সরল স্থায়ী কলাকে কোলেনকাইমা বলে।
• কাজ : উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করা , ক্লোরোপ্লাস্ট থাকলে খাদ্য প্রস্তুত করা এই কলার প্রধান কাজ।
16) স্ক্লেরেনকাইমা কি? ইহা কোথায় দেখা যায় ? এর বৈশিষ্ট্য ও কাজ লেখ?
Ans : লিগনিন দ্বারা গঠিত ,গৌণ কোষ প্রাচীর স্তর যুক্ত,কোশান্তর রন্ধ্রবিহীন, মৃত কোশসমষ্টি যে-সরল স্থায়ী কলা উদ্ভিদ অঙ্গের দৃঢ়তা প্রদানে সাহায্য করে, তাকে স্ক্লেরেনকাইমা কলা বলে ।
•অবস্থান : পেয়ারা ,আপেল , ন্যাসপাতি প্রভৃতি ফলের ফলত্বকে এবং বীজের বীজত্বকে।
• বৈশিষ্ট্য : i) এই কলার পরিণত কোশ মৃত ও প্রোটোপ্লাজম বিহীন হয়।
ii) স্ক্লেরেনকাইমা কলার কোশের কোশপ্রাচীরে সপাড় এবং অপাড় কূপ দেখা যায়।
iii) কোষপ্রাচীর অত্যন্ত স্থূল হওয়ায় এই কলার কোশের কোশগহব্বর খুব ছোট হয়।
• কাজ : উদ্ভিদ অঙ্গের দৃঢ়তা প্রদান করেন।
17) এপিডারমিস কি ?এর কাজ লেখ?
Ans : উদ্ভিদের সমগ্র দেহতলটি যে আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে, তাকেই এপিডারমিস বলে। এটি উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশকে রক্ষা করে এবং উদ্ভিদের জলের অপচয় রোধ করে।
18) পত্ররন্ধ্র কি? এর কাজ লেখ?
Ans : পাতার বহিঃত্বকে অনেক ছোট ছোট ছিদ্র থাকে তাদের পত্ররন্ধ্র বলে।
• কাজ :
i) গ্যাসীয় পদার্থের আদান-প্রদানের সাহায্য করে।
ii) বাষ্পমোচনের মাধ্যমে অতিরিক্ত জল ত্যাগ করা।
19) রক্ষীকোষ বা প্রহরী কোষ কি ? এর কাজ লেখ?
Ans : উদ্ভিদের পত্ররন্ধ্র বৃক্কের আকৃতির দুটি কোশ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে ,এদের রক্ষীকোষ বলে।
• কাজ : গ্যাসীয় পদার্থের আদান-প্রদানে এবং বাষ্পমোচনে সাহায্য করে।
20) মরু অঞ্চলের উদ্ভিদের বহিঃত্বকে জল প্রতিরোধী রাসায়নিক পদার্থের নাম কি?
Ans : কিউটিন নামক মোম জাতীয় পদার্থ।
21) কাষ্ঠল তন্তু কি?
Ans : জাইলেম কলার সাথে অবস্থিত স্ক্লেরেনকাইমা তন্তুকে কাষ্ঠল তন্তু বলে।
22) বাস্ট তন্তু কি?
Ans : ফ্লোয়েম কলার সাথে অবস্থিত স্ক্লেরেনকাইমা তন্তুকে বাস্ট তন্তু বলে।
23) উদ্ভিদের সংবহন কলা গুলির নাম করো ও এদের কাজ লিখ ?
অথবা, উদ্ভিদের জটিল স্থায়ী কলা গুলির নাম ও কাজ লেখ?
Ans : জাইলেম ও ফ্লোয়েম ।
• কাজ :
জাইলেম : জাইলেম এর মাধ্যমে মূলরোম দ্বারা শোষিত জল ও খনিজ লবণের ঊর্ধ্বমুখী পরিবহন ঘটে।
ফ্লোয়েম : পাতায় উৎপন্ন খাদ্য পরিবহন করা।
24) জাইলেমের উপাদান গুলির নাম কর?
Ans : ট্রাকিয়া, ট্রাকিড, জাইলেম প্যারেনকাইমা এবং জাইলেম তন্তু।
25) জাইলেমের সজীব উপাদানটির নাম কি ?
Ans : জাইলেম প্যারেনকাইমা।
26) ফ্লোয়েমের উপাদান গুলির নাম কর?
Ans : সিভনল, সঙ্গীকোশ, ফ্লোয়েম প্যারেনকাইমা এবং ফ্লোয়েম তন্তু।
27) ফ্লোয়েমের মৃত উপাদানটির নাম কি?
Ans : ফ্লোয়েম তন্তু।
28) জাইলেম ও ফ্লোয়েম এর পার্থক্য লিখ ?
Ans :
29) জাইলেমের বিভিন্ন উপাদান গুলির চিত্রসহ গঠন বৈশিষ্ট্য ও কাজ লিখ ?
Ans :
30) সংবহন কলা গুলি উদ্ভিদের সংবহন ছাড়া অপর কি কাজ করে?
Ans : যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদান করে।
31) উদ্ভিদ দেহে উপস্থিত সরল কলা এবং জটিল কলার মধ্যে কি কি পার্থক্য দেখা যায়?
Ans :
32) প্যারেনকাইমা কলার অবস্থান উল্লেখ কর?
Ans : উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড, পাতা ইত্যাদি অংশে এই কলা অবস্থিত।
33) উদ্ভিদ দেহে এপিডারমিসের ভূমিকা কি?
Ans : এপিডারমিস উদ্ভিদ দেহের বহির্দেশে আবরণী সৃষ্টি করে ।
34) কর্ক কিভাবে সুরক্ষা প্রদানকারী কলা হিসেবে কাজ করে?
Ans : কর্ক কোষগুলি মৃত এবং কোন প্রকার অন্তঃকোষীয় স্থান থাকে না। কর্ক কোষের কোষ প্রাচীর সুবেরিন দ্বারা গঠিত। সুবেরিন থাকার জন্য কোষগুলো জল ও গ্যাসের মধ্যে অভেদ্য হয়। ফলে জলশূন্যতা থেকে কোষগুলিকে রক্ষা করে। সংক্রমণ ও যান্ত্রিক ক্ষত থেকেও রক্ষা করে।
35) বিভাজন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদ কলা কত প্রকার ও কি কি ?
Ans : দুই প্রকার। ভাজক কলা ও স্থায়ী কলা।
36) বিভাজন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পর ভাজক কলা, কোন কলায় পরিণত হয়?
Ans : স্থায়ী কলা।
37) স্নায়ু কলা কোন কোষ দিয়ে গঠিত?
Ans : স্নায়ু কোষ এবং নিউরোগ্লিয়া দিয়ে গঠিত।
3) স্নায়ু কোষের মৃত্যুর পর ওই স্থানটি দখল করে কে ?
Ans : নিউরোগ্লিয়া।
39) প্রাণী কলা কি?
Ans : আকৃতি, উৎপত্তিস্থান ও কার্যপ্রণালী এক, প্রাণীদেহে এরূপ কোষসমষ্টিকে প্রাণী কলা বলে।
40) বিভিন্ন প্রকার প্রাণী কলার নাম লিখ?
Ans : প্রাণী কলা চার রকমের -- আবরণী কলা, যোগ কলা, পেশী কলা, স্নায়ু কলা।
41) পেশিতন্তুর আবরণকে কি বলে?
Ans : সারকোলেমা।
42) স্নায়ুতন্ত্রের গঠন মূলক ও কার্য মূলক এককের নাম কি?
Ans : স্নায়ুকোষ বা নিউরোন।
43) কোন পেশি ক্লান্ত হয় না এবং কেন?
Ans : হৃদপেশী ক্লান্ত হয় না। কারণ , i
হৃদপেশীর নি:সাড় কাল দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়।
ii ) হৃদপেশীতে মায়োগ্লোবিন এর পরিমাণ বেশি।
44) নিউরনের দীর্ঘ প্রবধর্কে কি বলে?
Ans : অ্যাক্সন।
45) স্নায়ু কোষের আবরণকে কি বলে?
Ans : নিউরোলেমা।
46) আবরণী কলা কি? এর কাজ লেখ?
Ans : যে কলা প্রাণীদেহে ত্বক ও বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মুক্ত তলে আচ্ছাদন তৈরি করে, তাকে আবরণী কলা বলে।
• কাজ : i) আবরণী কলা সংশ্লিষ্ট অঙ্গ বা তন্ত্রকে সুরক্ষা প্রদান করেন। ii) এই কলার বিশেষ কতকগুলি কোষ ক্ষরণে, রেচনে ও শোষণে সাহায্য করে।
iii) উদ্দীপনা গ্রহণ ও প্রেরণ করা।
47) সরল আ৺ইশাকার আবরণী কলা কি ?এর বৈশিষ্ট্য লিখ?
Ans : যে আবরণী কলার কোষ গুলি মাছের আঁশের মতো পাতলা এবং ভিত্তিপদার উপর একটি মাত্র স্তরে সাজানো থাকে ও কোষগুলি অসম প্রকৃতির হয় তাকে সরল আ৺ইশাকার আবরণী কলা বলে।
• বৈশিষ্ট্য :
i) কোষগুলি চ্যাপ্টা এবং সজ্জা মাছের আঁশের মতো। ii) কোষের কেন্দ্রে একটি গোলাকার বা ডিম্বাকার নিউক্লিয়াস থাকে। iii) কোষগুলি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে উচ্চতা অপেক্ষা বেশি।
• কাজ : i) নির্দিষ্ট অঙ্গের প্রতিরক্ষা। ii) গ্যাসীয় ও তরল পদার্থের আদান-প্রদানে সাহায্য করে। iii) পরিস্রাবণে সহায়তা করে।
48) স্তম্ভাকার আবরণী কলা কি?
Ans : ক্ষুদ্রান্তের অন্ত:আবরণীর মতো দেহের যেসব অংশে শোষণ এবং ক্ষরণ ঘটে, সেই সব অংশের আবরণী কলার কোষগুলো লম্বাটে হয়। এই ধরনের আবরণী কলাকে স্তম্ভাকার আবরণী ( Piller Like ) কলা বলে।
49) রোশম আবরণী কলা কি?
Ans : যে আবরণী কলার স্তম্ভাকার কোষগুলির এক প্রান্ত ভিত্তিপর্দার সঙ্গে আবদ্ধ থাকে এবং মুক্তপ্রান্ত সিলিয়াযুক্ত হয়, তাকে রোশম আবরণী কলা ( Ciliated Epithellium ) বলে।
50) গ্রন্থি ময় আবরণী কলা কি?
Ans : যে আবরণী কলার কোষ থেকে কোন বস্তু ক্ষরিত হয়ে, সেই ক্ষরণশীল কোশসমষ্টি যে-কলার সৃষ্টি করে, তাকে গ্রন্থিময় আবরণী কলা বলে।
51) যোগ কলা কি ?উদাহরণ দাও?
Ans : যে কলা দেহের বিভিন্ন কলা ও অঙ্গ সমূহের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে , তাকে যোগ কলা বলে। যেমন – রক্ত , লসিকা।
52) রক্ত কি?
Ans : রক্ত হল রক্তরস ও রক্ত কণিকা দিয়ে গঠিত ,অস্বচ্ছ, ক্ষারধর্মী ,তরল যোগকলা ।
53) রক্তের তরল ধাত্রকে কি বলে?
Ans : প্লাজমা।
54) রক্তের বিভিন্ন কনিকা গুলির নাম ও কাজ লিখ?
Ans : রক্তের কণিকা গুলি হল - লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা এবং অনুচক্রিকা।
• কাজ : লোহিত রক্তকণিকা : অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিবহনে সাহায্য করে। শ্বেত রক্ত কণিকা : রোগজীবাণু ধ্বংস করে, অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে, এন্টিবডি সৃষ্টি করে রোগাক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং
অনুচক্রিকা : রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে।
55) রক্তকে তরল যোগকলা বলে কেন?
Ans : রক্তকে তরল যোগকলা বলে , কারণ ----
১। রক্ত ভ্রূণজ মেসোডার্ম থেকে উৎপত্তি লাভ করে।
২৷ রক্তে ভিত্তি পর্দা থাকে না।
৩৷ রক্তে কোষীয় উপাদানের তুলনায় ধাত্রের পরিমাণ বেশি থাকে।
৪৷ রক্ত তার তরল ধাত্রের সাহায্যে দেহের বিভিন্ন কলা, অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
56) WBC ও RBC এর পুরো নাম কি ?
Ans : WBC = White Blood Cells ; RBC = Red Blood Cells
57) WBC ও RBC এর মধ্যে পার্থক্য লিখ?
Ans : ১। লোহিত রক্ত কণিকার নির্দিষ্ট আকার আছে।
• শ্বেত রক্তকণিকা অনিয়তকার।
২৷ পরিণত লোহিত কণিকা নিউক্লিয়াস বিহীন।
• শ্বেত রক্তকণিকা নিউক্লিয়াস যুক্ত।
৩৷ লোহিত কণিকার মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে।
• শ্বেত রক্তকণিকা মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে না।
৪৷ লোহিত রক্ত কণিকার প্রধান কাজ শ্বাস বায়ু পরিবহণ করা।
• শ্বেত রক্তকণিকার প্রধান কাজ জীবাণু ধ্বংস করা।
৫৷ লোহিত রক্ত কণিকার আয়ু বেশি।
• শ্বেত রক্তকণিকার আয়ু কম।
58) রক্তের কাজ লিখ?
Ans :
• কাজ :
i) রক্ত কোষে কোষে পুষ্টি দ্রব্য পরিবহন করে।
ii) রক্তের লোহিত কণিকা অক্সিজেন এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিবহনে অংশ নেয়।
iii) রক্তের অনুচক্রিকা রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে।
iv) রক্তের শ্বেতকণিকা রোগজীবাণু ধ্বংস করে, অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে, অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করে রোগাক্রমণ প্রতিরোধ করে।
59) লিগামেন্ট কি?
Ans : দুইটি অস্থি একে অপরের সাথে অন্য এক ধরনের যোগকলা দ্বারা যুক্ত থাকে, একে লিগামেন্ট বলে।
60) টেন্ডন কি?
Ans : টেন্ডন হলো অপর এক প্রকারের যোগকলা যা অস্থিকে পেশির সাথে যুক্ত রাখে। টেন্ডন মজবুত ও সীমিত নমনীয়তা সম্পন্ন তন্তুময় যোগকলা।
61) তরুণাস্থি কি?
Ans : তরুণাস্থি কোশ, ধাত্র ও পেরিকন্ড্রিয়াম দিয়ে গঠিত স্থিতিস্থাপক ও নমনীয় যোগকলাকে তরুণাস্থি বলে।
62) মেদ কলা কি ? এর কাজ লিখ?
Ans : চর্বি কোষ বিশিষ্ট রূপান্তরিত অ্যারিওলার কলাকে মেদ কলা ( Adipose) বলে।
• কাজ : ১। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ।
২। দেহের আকৃতি প্রদান করে।
৩। সঞ্চিত মেদ ভবিষ্যতের খাদ্য ভান্ডার।
63) পেশী তন্তু কি?
Ans : পেশী কলা এক ধরনের লম্বাটে কোশগুচ্ছের সমন্বয়ে গঠিত, এদের পেশিতন্তু বলে।
64) ঐচ্ছিক পেশি ও অনৈচ্ছিক পেশি কি ? উদাহরণ দাও।
Ans : অনুপ্রস্থ ব্যান্ড বা রেখাযুক্ত, স্বেচ্ছায় সংকোচনক্ষম পেশীকে ঐচ্ছিক পেশি বলে। যেমন - বাইসেপস, ট্রাইসেপস।
• যে সকল পেশির অনুপ্রস্থ রেখা থাকে না এবং স্বেচ্ছায় সংকোচনশীল নয়, তাদের অনৈচ্ছিক পেশি বলে। যেমন - চোখের সিলিয়ারি পেশী।
65) ঐচ্ছিক পেশীকে সরেখ পেশী বলে কেন?
Ans : ঐচ্ছিক পেশীকে যথাযথভাবে রঞ্জিতকরণের পর অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করলে এতে পর্যায়ক্রমিক ভাবে হালকা ও গাঢ় ব্যান্ড অথবা রেখাঙ্কন দেখা যায়। এই কারণেই ঐচ্ছিক পেশীকে সরেখ পেশি বলা হয়।
66) হৃদপেশী কি ? এর বৈশিষ্ট্য লিখ? হৃদপেশীর কাজ লিখ?
Ans : যে অনৈচ্ছিক ও সরেখ পেশি হৃদপিণ্ড গঠন করে, তাকে হৃদপেশী বলে ।
• হৃদপেশী মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃদপিন্ডের প্রাচীরে অবস্থিত।
বৈশিষ্ট্য :
১। অনুদৈর্ঘ্য ও অনুপ্রস্থ রেখা সমন্বিত অর্থাৎ সরেখ।
২। অনৈচ্ছিক কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংকোচনশীল।
৩। ইন্টারক্যালেটেড ডিস্ক থাকে।
৪। হৃদপেশী কোশে একটি মাত্র বড় আকারের ডিম্বাকৃতি নিউক্লিয়াস থাকে।
• কাজ :
১। হৃদপিণ্ডকে নির্দিষ্ট ছন্দে সংকুচিত ও প্রসারণক্ষম করে তুলে।
২। হৃদপিন্ডের গঠনে অংশগ্রহণ করে।
67) স্নায়ুকোষ বা নিউরোন কি ? এর কাজ লেখ?
Ans : অ্যাক্সন ও ডেনড্রন নামক প্রবর্ধক যুক্ত যে-বিশেষ কোশ স্নায়ুকলার গঠনগত ও কার্যগত একক রূপে কাজ করে, তাকে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে।
• কাজ : স্নায়ু স্পন্দন পরিবহন করা।
68) স্নায়ু কোষের চিত্র এঁকে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর?
Ans :
69) অ্যাক্সন ও ডেনড্রন কি? এদের মধ্যে পার্থক্য লেখ?
Ans : নিউরোনের ক্ষুদ্র প্রবর্ধকগুলিকে ডেনড্রন এবং দীর্ঘাকৃতি ও শাখাবিহীন প্রবর্ধককে অ্যাক্সন বলে।
• পার্থক্য :
১। নিউরোনের ক্ষুদ্র প্রবর্ধকগুলিকে ডেনড্রন এবং দীর্ঘাকৃতি ও শাখাবিহীন প্রবর্ধককে অ্যাক্সন বলে।
২। অ্যাক্সনে নিজল্ দানা থাকে না।
• ডেনড্রনে নিজল্ দানা থাকে।
৩। অ্যাক্সনে নিউরোলেমা থাকে।
• ডেনড্রনে নিউরোলেমা থাকে না।
70) স্নায়ু স্পন্দন কি?
Ans : স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা পরিবাহিত বার্তাকে স্নায়ু স্পন্দন বলে ।
71) আমাদের দেহের নড়াচড়ার জন্য দায়ী কলার নাম কি?
Ans : পেশী কলা।
72) নিউরোনকে দেখতে কেমন হয়?
Ans : তারকাকার।
73) শিথিল যোগ কলার কাজ গুলি কি কি?
Ans :
i) প্যাকিং কলা হিসেবে কাজ করে।
ii) বহিরাগত বিষাক্ত বস্তুর বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাহায্য করে।
iii) ক্ষুদ্র রক্তবাহ থেকে অক্সিজেন এবং পুষ্টি দ্রব্যের ব্যাপনে সাহায্য করে।
74) সরেখ , অরেখ ও হৃদপেশির মধ্যে পার্থক্য লিখ?
Ans : ১। সরেখ পেশি স্বেচ্ছায় সংকুচিত হয়।
• অরেখ পেশি স্বেচ্ছায় সংকুচিত হয় না।
• হৃদপেশী নিজে নিজেই সংকুচিত হয়।
২। সরেখ পেশিতে অনুপ্রস্থ রেখা বর্তমান।
• অরেখ পেশিতে অনুপ্রস্থ রেখা অনুপস্থিত।
• হৃদপেশিতে অনুপ্রস্থ রেখা বর্তমান।
৩। সরেখ পেশি অস্থির সঙ্গে সংলগ্ন থাকে।
• অরেখ পেশি খাদ্যনালী, মূত্রথলি প্রভৃতি আন্তরযন্ত্রের প্রাচীরে থাকে।
• হৃদপেশী হৃদপিণ্ডে থাকে।
75) নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে কলা গুলির নাম লেখ :
i) যে কলা আমাদের মুখের অন্তঃআবরণী গঠন করে।
ii) যে কলা মানবদেহ অস্থিকে পেশীর সাথে যুক্ত করে।
iii) যে কলা উদ্ভিদ দেহে খাদ্য পরিবহন করে।
iv) যে কলা আমাদের দেহে স্নেহপদার্থ সঞ্চয় করে রাখে।
v) তরল ধাত্র সম্পন্ন যোগ কলা।
vi) মস্তিষ্কে অবস্থিত কলা।
Ans :
i) স্কোয়ামাস এপিথেলিয়াম।
ii) টেনডন।
iii) ফ্লোয়েম ।
iv) অ্যাডিপোজ কলা।
v) রক্ত ও লসিকা।
vi) নার্ভ কলা।
76) স্নায়ুকলা কি? এর কাজ লেখ?
Ans : স্নায়ুকোষ এবং নিউরোগ্লিয়া দ্বারা গঠিত যে কলা উদ্দীপনা বহন করে ও ভৌত সমন্বায়ক রূপে কাজ করে, তাকে স্নায়ু কলা বলে।
• কাজ : ১। স্নায়ু কলা প্রাণীদের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সংযোগসাধন করে এবং বিভিন্ন কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
২। স্নায়ু কলার মাধ্যমে স্নায়ু স্পন্দন পরিবাহিত হয়।
77) বিভিন্ন প্রকার পেশীকলার নাম কর?
Ans : সরেখ ,অরেখ এবং হৃদপেশি।
78) আমাদের দেহে উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের যোগ কলার নাম কর?
Ans : শিথিল কলা , মেদ কলা, অস্থি, টেন্ডন, লিগামেন্ট, তরুণাস্থি এবং রক্ত।
79) আকৃতি ও কাজের ভিত্তিতে আবরণী কলা কত প্রকার ও কি কি?
Ans : পাঁচ প্রকার।
যথা ---- i) শল্কাকার , ii) ঘনকাকার, iii) স্তম্ভাকার, iv) রোশম এবং গ্রন্থিময় আবরণী কলা।
80) যোগকলার বৈশিষ্ট্য লিখ?
Ans :
১। যোগকলা ভ্রূণজ মেসোডার্ম থেকে উৎপত্তি লাভ করে।
২৷ যোগকলায় ভিত্তি পর্দা থাকে না।
৩৷ যোগকলায় কোষীয় উপাদানের তুলনায় ধাত্রের পরিমাণ বেশি থাকে।
৪৷ যোগকলা তার তরল ধাত্রের সাহায্যে দেহের বিভিন্ন কলা, অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
81) মানবদেহের সবচেয়ে বড় লসিকা গ্রন্থি কোনটি? Ans : প্লীহা ।
82) হ্যাভারসিয়ান তন্ত্র কোথায় দেখা যায় ? Ans : নিরেট অস্থিতে।
83) একটি নিউরোনের প্রধান অংশের গুলি কি কি?
Ans : কোষদেহ , ডেনড্রন ও অ্যাক্সন ।
84) কঙ্কাল পেশির সঙ্গে অস্থির সংযোগ রক্ষা করে কে?
Ans : টেনডন।
85) পেশিতে অবস্থিত প্রোটিনের নাম কি?
Ans : অ্যাকটিন ও মায়োসিন।
No comments